ইউক্রেনে রুশ বিমান হামলায় নিহত ২৪ |


পূর্ব ইউক্রেনের একটি গ্রামে রুশ বিমান হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত এবং আরও ১৯ জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি মঙ্গলবার এ খবর জানিয়েছে।


খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, নিহতরা সবাই “সাধারণ বেসামরিক মানুষ” যারা দোনেৎস্ক অঞ্চলের ইয়ারোভা গ্রামে পেনশন নিতে গিয়েছিলেন। 


আঞ্চলিক প্রশাসক ভাদিম ফিলাশকিন জানান, উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন এবং তিনি বাসিন্দাদেরকে “নিরাপদ অঞ্চলে সরে যাওয়ার” আহ্বান জানিয়েছেন।


ইয়ারোভা গ্রামটি স্লোভিয়ানস্ক শহরের উত্তরে, ফ্রন্টলাইনের কাছেই অবস্থিত, যেখানে রুশ বাহিনী ধীরগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। যদি হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত হয়, তবে এটি সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে ইউক্রেনীয় বেসামরিকদের ওপর অন্যতম ভয়াবহ হামলা হবে—যুদ্ধের ৪২ মাস পরেও।


গত আগস্টের শেষ দিকে কিয়েভে রাতে বিমান হামলায় ২৩ জন নিহত হয়েছিলেন। আর গত সপ্তাহান্তে রাশিয়া রাজধানীতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সবচেয়ে বড় আকাশ হামলা চালায়, যেখানে মূল সরকারি ভবনও আঘাতপ্রাপ্ত হয়। জেলেনস্কি একে আখ্যা দেন “নির্মম হামলা” হিসেবে, যার উদ্দেশ্য যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করা।


ইয়ারোভায় হামলার নৃশংস ভিডিও অনলাইনে প্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেন, “এই হামলার ভাষাহীন বর্ণনা।” রুশ সেনাদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল প্রায় ১০টা ৪০ মিনিটে পেনশন বিতরণের সময়ই হামলাটি হয় বলে জানান কাছের শহর লিমান-এর প্রশাসনিক প্রধান ওলেক্সান্দ্র জুরাভলিয়ভ। তিনি বলেন, নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন প্রবীণ মানুষ।


ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইগর ক্লাইমেনকো জানান, রাশিয়া গ্রামটির ওপর “নির্দেশিত বিমান বোমা” ফেলেছে। ঘটনাস্থলের ছবিতে ইউক্রেনের ডাক বিভাগের একটি গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি দেখা যায়, যা পেনশন বিতরণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল।


ডাক বিভাগের প্রধান জানান, গাড়িটি নিরাপত্তার জন্য গাছের নিচে রাখা হয়েছিল। হামলায় স্থানীয় এক ডাক কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। তিনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, “সম্ভবত কেউ কোঅর্ডিনেটস দিয়ে দিয়েছে।”


ইয়ারোভা একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলপথে অবস্থিত, যা লিমান ও ইজিউম শহরের সঙ্গে যুক্ত। এটি নোভোসেলিভকা নামের আরেকটি গ্রামের মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে, যেখানে রুশ সেনারা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে।


জুরাভলিয়ভ জানান, ফ্রন্টলাইন ১০ কিলোমিটারেরও কম দূরে হওয়ায় তারা পেনশন বিতরণের ব্যবস্থা অন্য নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে ২২ জনকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।


ডোনেৎস্ক অঞ্চলের অন্যান্য এলাকায় রুশ গোলাবর্ষণে আরও অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানায় ইউক্রেনের জরুরি সেবা সংস্থা (ডিএসএনএস)।


“বিশ্ব চুপ করে থাকতে পারে না,” মন্তব্য করে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং জি–২০ দেশগুলোর কাছ থেকে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি


বিডি প্রতিদিন/নাজিম





Source from Bangladesh Pratidin