গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান আরও তীব্র হয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গাজা সিটির দ্বিতীয় সুউচ্চ ভবনটিও ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। শহরটিতে চলমান হামলা এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের মাঝে এই ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
আজ সকালে, গাজা সিটির টাওয়ারটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার মুশতাহা টাওয়ার ধ্বংসের পর এটি দ্বিতীয় বড় ভবন, যা ইসরায়েলি হামলায় নিশ্চিহ্ন হলো। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, ইজরায়েল কাটজ, সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ টাওয়ারটি ধ্বংসের ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, আমাদের কাজ চলমান।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি, এই ভবনটি হামাস ব্যবহার করছিল। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হামলা চালানোর আগে, ইসরায়েল গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য লিফলেট ফেলে দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসিতে চলে যাওয়ার আহ্বান জানায়, যাকে তারা একটি ‘মানবিক অঞ্চল’ বলে উল্লেখ করেছে।
তবে, জাতিসংঘের মতে আল-মাওয়াসির তাঁবু ক্যাম্পগুলো অতিরিক্ত ভিড়পূর্ণ এবং অনিরাপদ। সেখানকার হাসপাতালগুলোও রোগীর চাপে প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম। গত মঙ্গলবার, আল-মাওয়াসিতেই পানি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা পাঁচ শিশু ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নিহত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
গাজা সিটির এই আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলো ছিল ফিলিস্তিনের নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের আশার প্রতীক। ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের পর এই ধরনের বহু-তলা ভবন নির্মাণ শুরু হয়, যা নির্বাসন থেকে ফিরে আসা হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেয়।
জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী, প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ এখনও গাজা সিটিতে রয়েছেন, যেখানে গত মাসেই দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে যে এই হামলা অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল