এক হাজার কোটি টাকার মালিক এনামুল করিম সুমন: জাওয়াদ নির্ঝর |


চট্টগ্রাম বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক (অপারেশন) এনামুল করিম সুমনের আমলনামা ফাঁস করেছেন সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর।


আজ শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তার আমলনামা তুলে ধরেন তিনি।


জাওয়াদ নির্ঝর লিখেন, পরিচয় করিয়ে দেই, চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখা ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক (অপারেশন) এনামুল করিম সুমনের সাথে।


# এনামুল করিমের মায়ের সাথে আ স ম আবদুর রবের সাথে সু-সম্পর্ক ছিল। আব্দুর রব ৯৬ সালে  নৌ-পরিবহন মন্ত্রী থাকাকালে মায়ের অনুরোধে চাকরি হয় এনামুলের। তাতেই কপাল খোলে তার। এরপর ক্ষমতার পটপরিবর্তনের হলে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন করে নানান অপকর্ম করতে থাকে। 


গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিজেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচয় দিতেন। বর্তমানে নিজেকে জামায়াত এবং বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন। 


# ১৭ বছর ধরে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বন্দরের পরিবহন সংক্রান্ত সকল অবৈধ লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ করেন।


# বন্দরে যত শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগ হয় সবগুলোর নিয়োগের নেপথ্যে রয়েছেন এনামুল। প্রতি নিয়োগ থেকে তিনি ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ নেন। এ নিয়োগ প্রক্রিয়া তিনি তার বিশ্বস্ত এজেন্টের মাধ্যমে করেন। তারা হলেন- বন্দর শ্রমিক কর্মচারী লীগ (রেজিস্ট্রেশন) ২৭৪৭ সভাপতি মীর নওশাদ, সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল চৌধুরী।


# বন্দরের অকশন ইয়ার্ডের অংশীদার রয়েছে এনামের। যা বেনামে রয়েছে।


# জেটিতে উঠা-নামা করা সকল কন্টেইনারের নির্দিষ্ট অংকের টাকা যায় এনামুলের পকেটে। এই আলাদা টাকা না দিলে নানা মারপ্যাচে আটকে রাখা হয় কন্টেইনার।


# বন্দরের আসা প্রায় প্রত্যেকটি ফাইল নিজেই তদারকি করেন। প্রতি ফাইলের ছাড়পত্রের জন্য তিনি জন্য সর্বনিম্ন ৫ হাজার থেকে শুরু করে কোটি টাকা পর্যন্ত। এসব তদারকি করেন তার ব্যক্তিগত পিএস সুজন। এ সুজনের বাড়ি গোপালগঞ্জে। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির লোক হিসেবে দাপট দেখাতেন। এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে তিনি। 


# আবুল খায়ের গ্রুপে বড় বিনিয়োগ রয়েছে এনামের। তিনি বিভিন্ন সময় ঘনিষ্ঠজনদের বলে বেড়ান চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি আবু খায়ের গ্রুপের ডিরেক্টর হিসেবে যুক্ত হবে। আগামী ২০২৬ সালে এনাম অবসরে যাবেন।


# চট্টগ্রাম বন্দরের কুতুবদিয়া, বহির্নোঙর ও অন্যান্য বিশেষায়িত জেটিতে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর সংক্রান্ত ২৩টি লাইসেন্স প্রদান করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। তার মধ্যে একটি লাইসেন্স নেন এনামুল করিম। এ লাইসেন্সর একটি অংশের মালিকানা রয়েছে আরসাদুল আলম বাচ্চুর। এ বাচ্চু সাবেক হুইপ সামশুল হকের ছেলে শারুনের ব্যবসায়িক পার্টনার। 


# বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাচ্চু কন্টেইনারে করে সোনা ও অবৈধ পণ্যের চালান আনতো বলে অভিযোগ রয়েছে। তার এ কাজে সহযোগিতা করতো এনাম। সহায়তার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ নিতেন।


# গোয়েন্দা সংস্থার দাবি আটশো থেকে ১ হাজার কোটি টাকার মালিক এনামুল করিম সুমন। বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। আমেরিকায় তার বাড়ি এবং বিনিয়োগ রয়েছে। দেশেও নামে এবং বেনামে প্রচুর সম্পত্তি এবং ব্যবসা রয়েছে।





Source from Bangladesh Pratidin