তিস্তায় পানি বাড়ায় উৎকণ্ঠায় নদীপাড়ের মানুষ |


উজানের ভারী বর্ষণে তিস্তায় পানি বাড়ছে। বন্যার আশঙ্কায় উৎকণ্ঠায় রয়েছে নদীপারের মানুষ। দেশের বৃহত্তম  সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে আজ সকাল ৬টায় বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।


সোমবার সকাল ৬টায় পানিপ্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ০৮ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। আর বিপদসীমার ধরা হয় ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।


ওই পয়েন্টের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, গত শনিবার রাত থেকে নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। রাতে পানিপ্রবাহ ৫১ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার হলেও রোববার প্রবাহিত হয় ৫২ সেন্টিমিটারে। সোমবার সকাল ৬টায় তা  বেড়ে ৫২ দশমিক ০৮ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয়। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিপদসীমা অতিক্রম করলে নীলফামারীসহ ভাটি অঞ্চল রংপুর, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে বন্যা দেখা দিতে পারে।


এদিকে, তিস্তায় পানি বৃদ্ধির খবরে নদীপাড়ের বিশেষ করে চরাঞ্চলের মানুষজন উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। বিপদসীমা অতিক্রম করার আগেই বন্যাকবলিত হয় উত্তরের ৫ জেলার চরাঞ্চলগুলো। এসব অঞ্চলের মানুষ ঘরবাড়ি ও গবাদিপশু নিয়ে উৎকণ্ঠায় পার করছে সময়।


গঙ্গাচড়ার কোলকোন্দ ইউনিয়নের মটুকপুর এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়া বলেন, সকাল থেকে পানি বাড়তেছে। রাতের মধ্যেই বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এমন আশঙ্কার কথা জানান, রমিজ উদ্দিনসহ অনেকে।


লহ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, উজানে প্রবল বর্ষণে তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরের মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়বে। আমরা সবসময় বিষয়টি পর্যবেক্ষণের মধ্যে রেখেছি।


তিস্তা নদী এলাকার বাসিন্দা কুদ্দুস মিয়া বলেন, আমরা নদীপাড়ের মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকি। বন্যা, খরা নদী ভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের জীবন অতিবাহিত হয়। বিশেষ করে ভারতের উজানে যে গেট রয়েছে তার নাম গজলডোবা। এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। খরা মৌসুমে গেটটি বন্ধ রাখা হয় আর বর্ষা এলেই থেমে থেমে পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে ভাসিয়ে দেয় ভারত। কারণ বৃষ্টির পানিতে বন্যা হয় না, বন্যা হয় ভারতের উজানের পানিতে।


তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে সকাল ছয়টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪ গেট খুলে রাখা হয়েছে।


তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তবে এখনও বিপৎসীমার নিচে আছে, তবুও আমরা সতর্ক আছি। চরের মানুষকে আমরা সতর্ক থাকতে বলেছি। -বাসস


বিডি-প্রতিদিন/শআ





Source from Bangladesh Pratidin