পাকিস্তানের দক্ষিণ পাঞ্জাব প্রদেশে ভয়াবহ বন্যার মধ্যে দুর্ঘটনায় অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার মুলতান জেলায় বন্যার্তদের বহনকারী একটি নৌকা প্রবল স্রোতে উল্টে যায়। তবে উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে অধিকাংশ যাত্রীকে বাঁচাতে সক্ষম হন।
রাভি, শতলুজ ও চেনাব নদীর প্লাবনে ইতোমধ্যেই ৪ হাজার ১০০টির বেশি গ্রাম ডুবে গেছে। পাঞ্জাব রিলিফ কমিশনার নাবিল জাভেদের তথ্য অনুযায়ী, ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ। গবাদি পশু রক্ষায় এখন পর্যন্ত ১৫ লাখের বেশি প্রাণীকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। দুর্গতদের সহায়তায় ৪২৩টি ত্রাণ শিবির, ৫১২টি চিকিৎসাকেন্দ্র এবং ৪৩২টি পশুচিকিৎসা পোস্ট স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, জুন থেকে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানে বর্ষাজনিত বন্যায় প্রায় ৯০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আল জাজিরার সাংবাদিক কামাল হায়দার জানাচ্ছেন, বন্যায় পুরো গ্রাম পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। মানুষ ঘর-বাড়ি, ফসল, এমনকি আমের বাগান ফেলে প্রাণ বাঁচাতে ছুটছে।
সাধারণত সেপ্টেম্বরে বর্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শিগগিরই দশম দফা মৌসুমি বর্ষণ শুরু হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পাকিস্তানে এবার বৃষ্টি ও বন্যার তীব্রতা আগের তুলনায় বেড়েছে।
পাঞ্জাব প্রদেশকে দেশের খাদ্যশস্যভাণ্ডার হিসেবে ধরা হয়, যেখানে গম উৎপাদন সবচেয়ে বেশি। অথচ সাম্প্রতিক বন্যায় হাজার হাজার একর জমির ফসল ডুবে গেছে। ২০২২ সালের বন্যাতেও পাকিস্তান ভয়াবহ খাদ্যসংকটে পড়েছিল। ফলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার মৌসুমি বৃষ্টি ক্রমেই অনিশ্চিত ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। সূত্র: আলজাজিরা
বিডি প্রতিদিন/নাজিম