কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু হলে আন্তর্জাতিক পর্যটনের বিকাশে তা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে কক্সবাজারে বিদেশি পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা নেই। নাইটলাইফ, নিরাপত্তা, অবকাঠামোসহ পর্যটকদের সুবিধার দিক থেকে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। পরিকল্পিত ও দ্রুত পদক্ষেপ নিলে বিদেশি পর্যটক আগমন বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে।
আমাদের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে সমুদ্রসৈকত নেই, যেমন—কুনমিং, ভুটান, নেপালসহ এশিয়ার কিছু দেশ থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে অনেকেই ‘হলিডে’ কাটাতে কক্সবাজার আসতে পারে। তাদের ভ্রমণ শুধু কক্সবাজারে সীমিত না রেখে পর্বত্য এলাকায়ও ছড়িয়ে দিতে হবে। এ জন্য সমন্বিত ট্যুর প্যাকেজ তৈরি, আনুষঙ্গিক সুবিধা সৃষ্টি, ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং করতে হবে।
আন্তর্জাতিক পর্যটকদের সেবা প্রদানের জন্য শহরে এখনো প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও বিনোদনের অভাব রয়েছে।
কক্সবাজারকে একটি স্বতন্ত্র বৈশ্বিক গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে, সরকারকে বিদেশি পর্যটনবান্ধব অবকাঠামোতে বিনিয়োগ এবং বিনোদনমূলক ও নাইটলাইফ প্রস্তাবগুলো সম্প্রসারণ করতে হবে।
বিদেশি পর্যটক আনতে হলে প্রথমে তাদের চাহিদাগুলো বুঝতে হবে। তাদের যা যা প্রয়োজন সেগুলোর ব্যবস্থা করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে আমরা যদি কুনমিং থেকে পর্যটক আনতে চাই, তাহলে চীনা খাবার, তাদের ভাষা জানা ট্যুর গাইড, তাদের উপযোগী নাইটলাইফের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
শুধু চীনা পর্যটক নয়, অন্য সব দেশের পর্যটকদের চাহিদাকে সম্মান করতে হবে। পর্যটকরা কমফোর্ট জোন চায়। তারা স্বাধীনভাবে প্রকৃতি উপযোগ করতে চায়। বিচে বিকিনি পরে সানবাথ করতে গেলে যদি হাজারো মানুষ তাকিয়ে থাকে, তাহলে ওই পর্যটক আর আসবে না। কক্সবাজারে পর্যটকদের জন্য ‘অ্যাক্টিভিটি’ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
আমাদের পর্যটন মহাপরিকল্পনা নেই। সে কারণে পর্যটন অবকাঠামোগুলো অপরিকল্পিতভাবে বেড়ে উঠেছে। তাই বলে সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি। কক্সবাজারে এখনো অনেক জায়গা পড়ে আছে। সেখানে বিদেশিদের জন্য পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা যায়। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিতে সেখানে বিপুল বিনিয়োগ পাওয়া সম্ভব।
লেখক : সভাপতি, ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল