হাঁস খামার করে স্বাবলম্বী আখাউড়ার যুবক |


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার এক যুবক হাঁস পালনে সাফল্য অর্জন করে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তিনি হলেন দক্ষিণ ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামের মোঃ সুজন মিয়া, পিতা মোঃ মনু মিয়া। দেশীয় পদ্ধতিতে হাঁস পালনের মাধ্যমে বর্তমানে তিনি মাসে প্রায় ১ লাখ টাকা আয় করছেন। তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক হাঁস পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।


খামারি সুজন মিয়া জানান, প্রায় ২০ বছর আগে আশুগঞ্জের শাহবাজপুর এলাকায় একটি বড় হাঁসের খামার দেখে তার অনুপ্রেরণা জাগে। বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ১০০ হাঁসের বাচ্চা কিনে শুরু করেন খামারি জীবন। ৬ মাস পর হাঁসগুলো ডিম দিতে শুরু করলে ডিম বিক্রি থেকে দ্বিগুণেরও বেশি লাভ হয়। এরপর প্রতিবার ডিম পাড়া শেষে হাঁস বিক্রি করে আরও মুনাফা পান। এতে তার উৎসাহ বেড়ে যায় এবং প্রতিবছর হাঁসের সংখ্যা বাড়তে থাকে।


সম্প্রতি তিনি সিলেট থেকে ৯০০ খাকি ক্যাম্পবেল প্রজাতির হাঁসের বাচ্চা আনেন। প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচে গড়ে তোলা খামারে বর্তমানে ৮৫০টি হাঁস রয়েছে। এর মধ্যে গত ১০ দিন ধরে প্রতিদিন প্রায় ৭০টি হাঁস ডিম দিচ্ছে। আশা করা হচ্ছে আগামী মাস থেকে ৬০০–৭০০ হাঁস ডিম দিবে। স্থানীয় বাজারে প্রতি হালি ডিম ৫৬–৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি হাঁস ৪০০–৪৫০ টাকা দামে বিক্রি করা যাবে। খরচ বাদ দিয়ে খামার থেকে মাসে গড়ে প্রায় ১ লাখ টাকা আয় হয়।


সুজন বলেন, পানির সময় হাঁস বিল-জলাশয়ে থাকে, আর পানি শুকালে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাকৃতিক খাবার যেমন শামুক, ঝিনুক, ধান ইত্যাদি খেয়ে সন্ধ্যায় হাঁসগুলো আশ্রয়ে ফিরে আসে। এতে খাবারের খরচও কমে যায়। শুরুতে দৈনিক ২ হাজার টাকা খরচ হলেও বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৬০০–৭০০ টাকার খাবার দিতে হয়। ছোটখাটো সমস্যা নিজেই সামাল দেন, আর বড় কোনো রোগ হলে স্থানীয় পশুসম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।


স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকেই সুজন সময়ের মূল্য দিয়ে পরিশ্রম করেছে। সে এলাকার যুবকদের কাছে এখন দৃষ্টান্ত।


আখাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ আলী আজমল বলেন, হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। উপজেলার অনেকেই এভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।


বিডি প্রতিদিন/আশিক





Source from Bangladesh Pratidin