রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় চালু হয়েছে বৈদ্যুতিক মিনি শাটল কার সার্ভিস। শব্দ ও ধোঁয়াহীন পরিবেশবান্ধব এই বাহন ‘আই’ ও ‘কে’ ব্লকে নিয়মিত চলাচল করছে। যাতায়াতে সময় ও খরচ কমায় স্বস্তি পেয়েছেন কম আয়ের কর্মজীবী মানুষ।
সোমবার বিকালে বসুন্ধরার ‘এ’ ব্লকে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ মিনিট অন্তর একেকটি শাটল কার ১০-১২ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে।
যাত্রীদের বেশির ভাগই গৃহকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী, নির্মাণ শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ।
‘কে’ ব্লকের একটি ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মোহাম্মদ হোসেন (৫৫) বলেন, আগে রিকশায় যাতায়াত করতাম। ‘এ’ ব্লক থেকে ‘কে’ ব্লকে যেতে ৫০ টাকা করে ১০০ টাকা খরচ হতো। এখন শাটল কারে গেলে মাত্র ২০ টাকায় হয়ে যায়। খরচ কম, আরামদায়ক, শব্দ নেই। তবে গাড়ির সংখ্যা কম হওয়ায় কখনো কখনো অপেক্ষা করতে হয়।
‘এ’ ব্লকের একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন রত্না (৩৫)। তিনি বলেন, ‘আগে রিকশাভাড়া দিতে পারতাম না বলে প্রতিদিন হেঁটে কাজের জায়গায় যেতাম। এখন ১০ টাকায় বাসে করে যাই। সময় বাঁচে, কষ্টও কম হয়। আমরা গরিব মানুষ, ১০০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে যাওয়া সম্ভব না।
শাটল কারচালক মো. শরীফ বলেন, সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ‘আই’ ব্লকে আমি ও আরেকজন চালক গাড়ি চালাই। ‘কে’ ব্লকে আরো দুটি গাড়ি চলে। ভাড়া ১০ টাকা। যাত্রীরা যেখানে নামতে চায়, সেখানে নামিয়ে দিই।
তিনি আরো বলেন, মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ আমাদের যাত্রী। বড় লোকেরা তো নিজেদের গাড়িতে চলে। গার্মেন্টসকর্মী, গৃহকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী, রাজমিস্ত্রিরা আমাদের গাড়িতে চড়েন। আমি গাড়ি চালিয়ে খুশি। সারা দিনে যা আয় করি, কুয়েতপ্রবাসী কেউ কেউ হয়তো এত টাকা পান না।
‘আই’ ব্লক থেকে ‘কে’ ব্লকে গাড়ি চালান জাবেদ হোসেন। তিনি বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে চারটি শাটল কার চলছে। এতে সবচেয়ে উপকার হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের। অনেকে মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারছেন। শুধু দরিদ্র লোকজন না, ছাত্র-ছাত্রী, তাদের মা-বাবা ও কিছু মধ্যবিত্ত মানুষও যাতায়াত করছেন।
যাত্রীরা বলছেন, এই উদ্যোগ পরিবেশবান্ধব ও খরচ সাশ্রয়ী। তবে তাদের মতে, গাড়ির সংখ্যা বাড়ানো গেলে আরো বেশি মানুষ এর সুবিধা পাবে।